নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদুল আযহা উপলক্ষে আজ শুক্রবার থেকে বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে। ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে। বাসের টিকিট পাওয়া যাবে রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল, কলাবাগান, মতিঝিল, ফকিরাপুল ও আশপাশ এলাকার বাস কাউন্টারগুলোতে।
বাসের টিকিট বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিন বলেন, আমাদের সংগঠনের আওতায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে চলাচলকারী বাসের টিকিট বিক্রি শুক্রবার থেকে শুরু করব। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রেল মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এ জন্য ২৩টি কাউন্টার খোলা রাখা হচ্ছে। নারীদের জন্য একটি ও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি কাউন্টার। তিনি বলেন, শুক্রবার ২৭ আগস্টের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। ১৯, ২০, ২১ ও ২২ আগস্ট বিক্রি হবে যথাক্রমে ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ আগস্টের অগ্রিম টিকিট।
মন্ত্রী জানান, ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার জন্য রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, ও লালমনিরহাট স্টেশন থেকে ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, ২৫ আগস্ট বিক্রি হবে ফিরতি ৩ সেপ্টেম্বরের টিকিট, ২৬ আগস্ট বিক্রি হবে ৪ সেপ্টেম্বরের টিকিট, ২৭ আগস্ট বিক্রি হবে ৫ সেপ্টেম্বরের টিকিট, ২৮ আগস্ট বিক্রি হবে ৬ সেপ্টেম্বরের টিকিট ও ২৯ আগস্ট বিক্রি হবে ৭ সেপ্টেম্বরের টিকিট।
বাস ও ট্রেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২ সেপ্টেম্বর ঈদ হলে সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে ৩০ ও ৩১ আগস্ট তারিখের টিকিটের। ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার। ওই দিন সরকারি চাকরিজীবীসহ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা শেষ কর্মদিবস ধরে অফিস শেষে ঢাকা ছাড়বেন। যারা এই দিনের টিকিট পাবেন না, তারা পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার ঢাকা ছাড়বেন।
কালোবাজারে টিকিট বিক্রি ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, কালোবাজারি ঠেকাতে আনসার, পুলিশ, র্যাব ও রেলপুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করবে। ঈদের ৫ দিন পূর্ব হতে অর্থাৎ ২৮ আগস্ট থেকে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের ডে অফ বাতিল করা হবে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪ টি টিকিট পাবেন। বিক্রিত টিকিট ফেরত নেয়া হবে না।
ঈদ উপলক্ষে ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সরবারাহ করা হবে জানিয়ে মুজিবুল হক বলেন, পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ হতে ৭২টি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ হতে ৬৬টিসহ মোট ১৩৮টি কোচ সংযোজন করা হবে। সর্বমোট ১ হাজার ২৯৬টি কোচ সারাদেশে চলাচল করবে। গতবছর ১ হাজার ২২২টি কোচ চলাচল করেছিল। এবার ৭৪টি কোচ বেশি চলাচল করবে। ঈদ উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১১টিসহ মোট ২২৯টি লোকোমোটিভ ব্যবহার করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
নাশকতা প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চলন্ত ট্রেনে, স্টেশনে বা রেললাইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আরএনবি, জিআরপি ও রেল কর্মচারীদের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশের সহযোগীতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।
যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোন গুডস ট্রেন চলাচল করবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ২৮ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টম্বর পর্যন্ত সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া এবার ঈদে রেলযাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে অতিরিক্ত ৭ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে বলেও জানিয়েছেন মুজিবুল হক।